ঢাকায় খুন হওয়া ব্যাবসায়ী সোহাগের দাফন বরগুনা সম্পন্ন


 ঢাকার মিটফোর্ডে চাঁদাবাজির জেরে নির্মমভাবে খুন হওয়া ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের দাফন সম্পন্ন হয়েছে তার নিজ জেলা বরগুনার সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে নানাবাড়িতে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে বরগুনা সদর উপজেলার রায়ভোগ গ্রামে মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

জানা যায়, সোহাগের দুই সন্তান রয়েছে—মেয়ে সোহানা (১৪) ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ছেলে সোহান (১১) চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় ভাঙ্গারী ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সোহাগ। শুরুতে অন্যের অধীনে কাজ করলেও গত পাঁচ বছর ধরে তিনি নিজেই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।

বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের সামনে তাকে রড ও বড় পাথর দিয়ে মাথা ও বুকে আঘাত করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর হামলাকারীদের উল্লাস এবং মুখে পাথর নিক্ষেপের দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোহাগের সঙ্গে স্থানীয় এক যুবদল নেতা মঈনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। একসময় সখ্যতা থাকলেও সম্প্রতি মঈন তার ব্যবসার অর্ধেক ভাগ দাবি করলে বিরোধ শুরু হয়। এ বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ ঘটনায় নিহত সোহাগের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ড ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলায় গ্রেফতাররা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে।

শতাধিক মানুষের সামনে সংঘটিত এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সারা দেশে উত্তাল প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নিহত সোহাগের পরিবার ও বরগুনার সাধারণ মানুষ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post